১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১১:১৪
ইয়েমেনকে সামলাতে পারছে না ইসরাইল

ইসরায়েলও আমেরিকা ও সৌদি আরবের মতো ইয়েমেনকে দমাতে পারছে না।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক কুইন্সি ইনস্টিটিউট-এর সহযোগী সাময়িকী 'রেসপনসিবল স্টেটক্রাফট' এক বিশ্লেষণে লিখেছে, ইসরায়েল ইয়েমেনে হামলা চালানোর পর আনসারুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ আল-বুখাইতি ঘোষণা দেন যে, 'যুদ্ধ নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।' 



সাময়িকীটি বলছে, বুখাইতি ভুল বলেননি, কারণ এই হামলা দুই বছরের পুরোনো এই ক্ষয়িষ্ণু যুদ্ধের কাঠামোয় এক মৌলিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। একদিকে অঞ্চলের প্রযুক্তিগতভাবে সবচেয়ে উন্নত সেনাবাহিনী, অন্যদিকে সবচেয়ে অভিজ্ঞ গেরিলা বাহিনী মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে।

বিশ্লেষণটিতে আরও বলা হয়, এই সংঘর্ষকে ত্বরান্বিত করেছে গাজার যুদ্ধ। সেটি ইয়েমেনিদের জন্য আদর্শিক জ্বালানি ও রাজনৈতিক সুযোগ এনে দিয়েছে নিজেদের পুনর্গঠনের জন্য।

তারা ফিলিস্তিনের সঙ্গে সংহতির ভূমিকা গ্রহণ করেছে এবং এভাবে তারা আঞ্চলিক হুমকিস্বরূপ এক শক্তি থেকে বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রভাব বিস্তারকারী এক পরিবর্তনসাধক শক্তিতে রূপ নিয়েছে।

কুইন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসে পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে বদলে যায়। যখন ট্রাম্প প্রশাসন ব্যয়সাপেক্ষ ও ব্যর্থ বিমান অভিযানের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়ে ইয়েমেনিদের সঙ্গে হঠাৎ করে এক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।

এই চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনি লক্ষ্যবস্তুতে বোমাবর্ষণ বন্ধ করবে এবং ইয়েমেনিরা আমেরিকার জাহাজে আক্রমণ স্থগিত রাখবে। এই সমঝোতা আসলে ইয়েমেনিদের জন্য এক বিরাট সাফল্য ছিল। তারা বলতে সক্ষম হয়—একটি পরাশক্তির সঙ্গে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থেকেও তারা টলেনি।

প্রতিবেদনটি আরও উল্লেখ করে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই সমঝোতা ইসরাইলকে সম্পূর্ণরূপে পাশ কাটিয়ে সম্পন্ন হয়। এতে তেলআবিব বুঝতে পারে, ইয়েমেনের মুখোমুখি দাঁড়াতে গিয়ে তারা একা পড়ে গেছে।

সাময়িকীটির মতে, বিমান হামলায় ইয়েমেনিদের হারানো প্রায় অসম্ভব—এটি সৌদিদের সাত বছরের ব্যর্থ হস্তক্ষেপ থেকেই স্পষ্ট। একই শিক্ষা আবারও পেয়েছে ওয়াশিংটন— স্বল্পমেয়াদী বিমান যুদ্ধ ফলপ্রসূ নয়, আর স্থল আক্রমণ সম্পূর্ণরূপে অকল্পনীয়। ফলে ইসরাইল এখন ইয়েমেনে এমন এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে, যেখানে সামরিক কোনো জয়লাভের পথই খোলা নেই।

কুইন্সি ইনস্টিটিউটের মতে, এই পরিস্থিতি ইয়েমেনিদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর রাজনৈতিক বা সামরিক কৌশলকেই অসম্ভব করে তুলেছে। এর ফলে তারা উত্তর ইয়েমেনের বাস্তবিক শাসক হিসেবে চ্যালেঞ্জহীন অবস্থান ধরে রেখেছে।

বিরোধী পক্ষের জন্য এটি এক কৌশলগত অচলাবস্থা, যার কোনো স্পষ্ট সমাধান নেই এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়াও কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এমন বাস্তবতায় ইসরাইল নিজেকে এমন এক সংঘাতে আবদ্ধ দেখছে, যার জয়ী হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই তার হাতে নেই।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha